আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড - বাংলাদেশ

আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড ইসলামী শরীয়াহ্ মোতাবেক পরিচালিত সুদমুক্ত বেসরকারি ব্যাংক। ১৯৯৫ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর এটি কার্যক্রম শুরু করে। এর ব্যাংকিং ব্যবসা ইসলামী আইন ও নীতি অনুযায়ী সুদমুক্ত পদ্ধতিতে সম্পাদিত হয় এবং এই উদ্দেশ্যে এর একটি ‘শরীয়াহ কাউন্সিল’ রয়েছে। ব্যাংকটি ১৯৯১ সালের ব্যাংক কোম্পানি অ্যাক্ট-এর অধীনে ব্যাংকিং সেবা প্রদান করছে। ১৩ সদস্যবিশিষ্ট একটি পরিচালনা পর্ষদের উপর আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংকের সার্বিক ব্যবস্থাপনা ও নীতি প্রণয়নের দায়িত্ব ন্যস্ত করা হয়েছে। এর প্রধান নির্বাহী একজন ব্যবস্থাপনা পরিচালক। এর প্রধান কার্যালয় ঢাকায়।

আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক হালাল দ্রব্যাদি ক্রয়বিক্রয়ে লাভক্ষতির ভিত্তিতে তহবিল বিনিয়োগ করে। ব্যাংক মুদারাবা আমানত তহবিল বিনিয়োগের মাধ্যমে অর্জিত আয়ের একটি স্থায়ী অংশ আমানতকারীদের মধ্যে বণ্টন করে। ব্যাংকের বিনিয়োগসমূহ নিয়মিত ও নিবিড়ভাবে তদারকি করা হয় যাতে কোনো বিনিয়োগ বা এর অংশবিশেষ মেয়াদোত্তীর্ণ ও লোকসানি ঋণে পর্যবসিত না হয়। ৬টি পদ্ধতিতে আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক তহবিল বিনিয়োগ করে। এই পদ্ধতিগুলি হচ্ছে মুদারাবা অর্থায়ন, বাই-মুয়াজ্জাল, বাই-সালাম, ইজারা বিল-বাই, মুদারাবা বিনিয়োগ এবং মুশারাকা। মুদারাবা অর্থায়ন পদ্ধতিতে গ্রাহকের অনুরোধ ও চাহিদানুযায়ী ব্যাংক বিভিন্ন দ্রব্য ক্রয় ও বিক্রয় করে। বাই-মুয়াজ্জাল পদ্ধতিতে ব্যাংক দ্রব্যাদি ক্রয়পূর্বক ক্রয়মূল্যের সাথে মুনাফা ও অন্যান্য খরচের অঙ্ক যোগ করে বিক্রয় মূল্য স্থির করে এবং যথাযথ জামানত গ্রহণপূর্বক দ্রব্যাদি ধারে গ্রাহকদের নিকট বিক্রয় করে। বাই-সালাম বা অগ্রিম বিক্রয় পদ্ধতিতে ভবিষ্যতে একটি নির্দিষ্ট তারিখে মালামাল সরবরাহ করা হবে এই মর্মে ব্যাংক কোনো উৎপাদন বা সরবরাহকারীর সাথে চুক্তি সম্পাদনপূর্বক মালামালের মূল্য অগ্রিম পরিশোধ করে দেয়। ভবিষ্যতে উৎপাদিত দ্রব্যের মূল্য বেড়ে গেলে উৎপাদনকারী এবং কমে গেলে ব্যাংক চুক্তিবহির্ভূতভাবে বেশি দাম আরোপ বা কম দাম দেওয়ার দাবি উত্থাপন করতে পারে না। অবশ্যই চুক্তিতে নির্ধারিত মূল্যে উৎপাদনকারী কর্তৃক মালামাল সরবরাহ এবং ব্যাংক কর্তৃক তা গ্রহণের কাজ সম্পন্ন করতে হয়।

ইজারা বিল-বাই বা ভাড়া-ক্রয় পদ্ধতিতে সম-অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে ব্যাংক দীর্ঘস্থায়ী দ্রব্যাদি ক্রয়পূর্বক কিস্তিতে মূল্য পরিশোধের শর্তে গ্রাহকদের নিকট হস্তান্তর করে। মুদারাবা বিনিয়োগ পদ্ধতিতে ব্যাংক নির্দিষ্ট গ্রাহকের সাথে এ মর্মে চুক্তিবদ্ধ হয় যে, গ্রাহক যদি দক্ষতা ও সততার সাথে ব্যবসায়িক কার্যক্রম পরিচালনা করে তাহলে ব্যাংক গ্রাহকের ব্যবসায়ে তহবিল বিনিয়োগ করবে। চুক্তি অনুযায়ী ব্যাংক এবং গ্রাহক যৌথভাবে লাভলোকসান ভোগ ও বহন করে। মুশারাকা পদ্ধতিতে ব্যাংক অংশীদার হিসেবে গ্রাহকের ব্যবসায়ে মূলধন সরবরাহ করে। এক্ষেত্রে উভয় পক্ষ কর্তৃক গৃহীত সিদ্ধান্ত মোতাবেক মুনাফাসমূহ বণ্টন করা হয় এবং সরবরাহকৃত মূলধনের অনুপাতে ব্যাংক ও গ্রাহক ক্ষতি বহন করে। আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক সামাজিক ও জনকল্যাণমূলক কাজের অংশ হিসেবে ১৯৯১ সালে এআইবিএল ইংলিশ মিডিয়াম মাদ্রাসা ও এআইবিএল লাইব্রেরি প্রতিষ্ঠা করেছে।
[মোহাম্মদ আবদুল মজিদ - বাংলাপিডিয়া]