অদ্ভুত রহস্যময়তার আবর্তে বন্দি জোন অব সাইলেন্স বা নীরব ভূমি। মেক্সিকো মরুভূমির নামই জোন অব সাইলেন্স। এই নীরব মরুর প্রতি কদমে রহস্যের আনাগোনা। এখানে রয়েছে ঘুটঘুটে অন্ধকার, ভুতুড়ে পরিবেশ। রাতের গুমোট আঁধারে উল্কা বৃষ্টি নামে। টেপরেকর্ডার বাজাতে থাকলে হঠাৎই থেমে যায়। চলন্ত গাড়ির স্টার্ট বন্ধ হয়ে যায়। এসব কেন হয় তা আজও অদৃশ্য কারণের কাছে জিম্মি।
কুখ্যাত বারমুডা ট্রায়াঙ্গাল আর জোন অব সাইলেন্স একই অক্ষাংশে। সেন্ট্রাল মেক্সিকোর মাসিপি মরুভূমির দশ বর্গমাইল এলাকা জুড়ে এই নীরব ভূমিতে আনাগোনা আজব সব প্রাণীর। এখানকার পোকামাকড়ও স্বাভাবিক পোকামাকড়ের চেয়ে তিনগুণ বড়। একবার নিক্ষিপ্ত আমেরিকান একটি মিসাইল নিদিষ্ট লক্ষ্যে আঘাত না হেনে বিশেষ এই এলাকাটিতে এসে পড়ে। এখানে নিত্যদিনে রাতের বেলায় ধুমসে উল্কা ছিটকে পড়ে। জোন অব সাইলেন্সের পাথরগুলোও এমন ভুতুড়ে যে কম্পাসকে পর্যন্ত বিগড়ে দেয়। এই এলাকার উপর দিয়ে উড়ে যাবার সময় পাইলটরা অভিযোগ করেছেন, তাদের সবকিছু কেমন যেন বিভ্রান্তিকর ঠেকে। এখানকার দৈত্যাকার ক্যাকটাসগাছগুলো টকটকে লাল রঙের কিন্তু এই গাছই যখন এই এলাকার বাইরে নিয়ে যাওয়া হয় তখন তা সর্ম্পূনরূপে রং হারিয়ে ফেলে। এখানকার বেঁটে হরিণগুলোর শিং মানুষের কবজির মতো মোটা। আর বিছাগুলো কোনোটাই লম্বায় এক ফুটের কম নয়। এগুলোর মাথা টকটকে লাল। জোন অব সাইলেন্সে কোনো মানুষ বসতি গড়ার শখ পর্যন্ত কিেন। মরুভূমির আশপাশের মানুষ প্রতি রাতে আকাশে অদ্ভুত এক ধরনের আলো এদিক ওদিক ছুটে চলতে দেখে। এই মরুভূমির নিকটবর্তী শহর সেবালোসের কেউ কেউ এখানে ফ্লাইং সসার দেখেছে বলে দাবি করেছে। পুলিশ চিফ ম্যানুয়েল শাপেরো বলেছেন, সেদিন রাতে দেখলাম প্রকাণ্ড আকৃতির একটি এয়ারক্রাফট শহর থেকে ৫০ ফুট উচ্চতায় ঝুলে আছে। যানটি আয়তক্ষেত্রের মতো, ধাতুর তৈরি, ওটার চারপাশে আলো জ্বলছিল আর গুনগুন করে শব্দ হচ্ছিল। মিনিট কয়েক যানটি ওভাবেই শূন্যে ভেসে রইল, তারপর ঘুড়ির মতো গোত্তা খেয়ে ছুটল জোন অব সাইলেন্সের দিকে। ১৯৭০ সালে ইউএস এয়ারফোর্স ‘অ্যাথেনা’ নামে একটি মিসাইল উটাহর গ্রিণ রিভার থেকে নিউ মেক্সিকোর হোয়াইট স্যান্ডে নিক্ষেপের জন্য প্রোগ্রাম করে। কিন্তু মিসাইলটি আসল জায়গায় না গিয়ে পড়ে ওই ভুতুড়ে মরুতে।
ইউএফও গবেষণাবিদ এবং লেখক ব্রাডস্টিগার ব্যাপারটি ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বলেছেন, এর দুটি কারণ থাকতে পারে- হয় কোনো অজানা শক্তি মিসাইলটি ধ্বংস করেছে নতুবা কোনো ইউএফও তার আন্ডারগ্রাউন্ড বেস থেকে ওটাকে জোন অব সাইলেন্সে টেনে এনেছে। তবে এসবই অনুমান আর ধারণা। এই ভুতুড়ে মরুর রহস্যের আজও কোনো কিনারা হয়নি।