সিটি ব্যাংক লিমিটেড, বাংলাদেশ

সিটি ব্যাংক লিমিটেড দেশের বেসরকারি খাতে সর্বপ্রথম অনুমোদনপ্রাপ্ত বাণিজ্যিক ব্যাংক। প্রতিটি ১০০ টাকা মূল্যের ২ মিলিয়ন সাধারণ শেয়ারে বিভক্ত ২০০ মিলিয়ন টাকা অনুমোদিত এবং ৩.৪ লক্ষ সাধারণ শেয়ারে বিভক্ত ৩৪ মিলিয়ন টাকা পরিশোধিত মূলধন নিয়ে সিটি ব্যাংক লিমিটেড ২৭ মার্চ ১৯৮৩  সালে ব্যাংকিং ব্যবসায় আরম্ভ করে। মোট পরিশোধিত মূলধনের মধ্যে ৩০ মিলিয়ন টাকা ব্যাংকটির উদ্যোক্তাগণ এবং ৪ মিলিয়ন টাকা বাংলাদেশ সরকার পরিশোধ করে। বিভিন্ন ধাপে বৃদ্ধি করার ফলে এ ব্যাংকের পরিশোধিত ও শেয়ার মূলধনের পরিমাণ ২০০৯ সালের মার্চ শেষে দাঁড়ায় যথাক্রমে ১৭৫০ মিলিয়ন ও ১৩৬৬ মিলিয়ন টাকা। এ পরিশোধিত মূলধনের মধ্যে ৬৮৩ মিলিয়ন টাকা উদ্যোক্তাগণ কর্তৃক এবং অবশিষ্ট ৬৮৩ মিলিয়ন টাকা জনসাধারণ কর্তৃক পরিশোধিত।

চেয়ারম্যান ও একজন ভাইস চেয়ারম্যানসহ ১২ সদস্যবিশিষ্ট একটি পরিচালক পর্ষদ এ ব্যাংকের সার্বিক ব্যবস্থাপনা ও নীতি নির্ধারণের দায়িত্বে নিয়োজিত। ব্যবস্থাপনা পরিচালক ব্যাংকটির প্রধান নির্বাহী। ৩ জন উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক, ৭ জন বিভাগীয় প্রধান সমন্বয়ে এ ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা টিম গঠিত। দেশের ৬টি বিভাগীয় শহরে এ ব্যাংকের ৬টি আঞ্চলিক অফিস রয়েছে। সিটি ব্যাংক লিমিটেড সর্বপ্রকার বাণিজ্যিক ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালনা করে। প্রধান ব্যবসায় হিসেবে ব্যাংকটি আমানত সংগ্রহ, ঋণদান এবং বৈদেশিক বাণিজ্যের ওপর অধিকতর গুরুত্বারোপ করে আসছে। সিটি ব্যাংক লিমিটেড প্রধান কার্যালয়ের চারটি ব্যবসায়িক বিভাগ থেকে দেশের সকল শাখার কার্যক্রম কেন্দ্রীয়ভাবে নিয়ন্ত্রণ করে। বিভাগগুলি হলো (১) কর্পোরেট এবং বিনিয়োগ ব্যাংকিং; (২) রিটেইল ব্যাংকিং; (৩) এসএমই ব্যাংকিং; এবং (৪) ট্রেজারি ও মার্কেট রিস্ক। সার্বক্ষণিক ব্যাংকিং প্লাটফরম হিসেবে শক্তিশালী প্রযুক্তি উৎকর্ষতার মাধ্যমে কেন্দ্রীয় এই চার বিভাগ থেকে সকল কার্যক্রম এমনভাবে সমন্বয় সাধিত হয় যে, গ্রাহকদেরকে সুচারুরূপে সর্বোচ্চ সেবা প্রদান নিশ্চিত করা হয়ে থাকে। ব্যাংকের ৮৭টি অনলাইন শাখা এবং একটি পূর্ণাঙ্গ ইসলামিক ব্যাংকিং শাখাসহ ১০টি এসএমই সার্ভিস সেন্টার দেশব্যাপী ব্যাংকিং সেবা প্রদানের জন্য নিয়োজিত রয়েছে। বর্তমানে ব্যাংকটির নিজস্ব ৪৬টি এবং সহযোগী ব্যাংকের সাথে ৫৫০টি এটিএম বুথ রয়েছে। এছাড়া রয়েছে এসএমই ব্যাংকিং ও ইন্টারনেট ব্যাংকিং-এর সুবিধা সম্বলিত ব্যবস্থাপনা। কাস্টমার সেল সেন্টার চালু করা হয়েছে সম্প্রতি। সিটি ব্যাংক বাংলাদেশে দ্বৈত মুদ্রায় ক্রেডিট কার্ড ইস্যুকারী প্রথম ব্যাংক। ব্যাংকটি বাংলাদেশে ভিসা ইন্টারন্যাশন্যাল-এর প্রধান সদস্য এবং স্থানীয় মুদ্রা (টাকা) এবং বিদেশি মুদ্রা (মার্কিন ডলার) সুবিধা সম্বলিত একক প্লাস্টিকের কার্ড ইস্যু করেছে। ভিসা ডেবিট কার্ড ইস্যুর মাধ্যমে লাইনে দাঁড়িয়ে ব্যাংক সুবিধা গ্রহণের বিড়ম্বনাকে দূর করতে সহায়ক হয়েছে। ২০০৯ সালের নভেম্বর মাসে সিটি ব্যাংক আমেরিকান এক্সপ্রেস ক্রেডিট কার্ড এবং আমেরিকান এক্সপ্রেস গোল্ড কার্ড ইস্যু করে। বাংলাদেশের আমেরিনকান এক্সপ্রেস কার্ডের বিপণন, নগদায়ন, হিসাবায়ন, প্রত্যাবসনসহ সকল বিষয় ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব পেয়েছে সিটি ব্যাংক। সিটি ব্যাংক বাংলাদেশে আমেরিকান এক্সপ্রেসের কার্ড হোল্ডারদের বিশেষ সেবাসহ নানান সুযোগ সুবিধারও ব্যবস্থা করেছে। সিটি ব্যাংক লিমিটেড বিদেশে কর্মরত বাংলাদেশিদের রেমিট্যান্স প্রত্যাবসনসহ আন্তর্জাতিক বাণিজ্য লেনদেনে মধ্যপ্রাচ্য, ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রে ফরেন একচেঞ্জ ব্যবসায় অনলাইন ব্যবস্থায় অনেকগুলি সংযোগ চুক্তিতে আবদ্ধ।সিটি ব্যাংক ২০০৮ সালে ব্যাংকের লোগো পরিবর্তন করে একে ‘মেকিং সেন্স অব মানি’ শ্লোগানের আরো বেশি গতিশীল ও গ্রাহকসেবা অভিমুখীকরণের পদক্ষেপ গ্রহণ করে।
[মোহাম্মদ আবদুল মজিদ - বাংলাপিডিয়া]