সারা বিশ্বের সময় নির্ধারিত হয়ে থাকে গ্রিনিচ মান সময় অনুসরণে। তবে গ্রিনিচ মানের দিন এখন শেষ হয়ে আসছে বলা যায়। কারণ দিন এসেছে মক্কা মান সময়ের। পৃথিবীর সময় নির্ধারক ঘড়িকে অতিক্রম করে মক্কায় অবস্থিত মক্কা ক্লক এখন পৃথিবীর সবচেয়ে বড় ঘড়ি। পবিত্র কাবা শরিফের দক্ষিণ গেটের কাছাকাছি ৭টি বিশাল টাওয়ারের আব্রাজ আল বাইত কমপ্লেক্সের মাঝে তৈরি করা হয়েছে রয়েল মক্কা ক্লক টাওয়ার। এ টাওয়ারের ওপর বসানো হয়েছে বিশ্বের সর্ববৃহৎ ঘড়ি ‘মক্কা ঘড়ি’।
তুরস্কের রাজধানী ইস্তাম্বুলে সেবাহির মলে যে ঘড়িটি আছে আয়তনের দিক দিয়ে এটিই ছিল এতদিন বিশ্বের বৃহত্তম ঘড়ি, যার ডায়াল ছিল ৩৬ মিটার চওড়া। কিন্তু মক্কা ঘড়ির ডায়াল ৪৩ মিটার। লন্ডনের বিগবেনের চেয়ে মক্কা ঘড়ির ডায়াল ৬ গুণ বড়।
পৃথিবীর দ্বিতীয় সুউচ্চ টাওয়ারে এ ঘড়িটি স্থাপন করা হয়েছে। এই টাওয়ারটি মোট ৯৫ তলা। এই টাওয়ারে রয়েছে সাত তারা হোটেলসহ বৃহৎ শপিং মল। টাওয়ারের উচ্চতা ৬০১ মিটার। ৩০০ কোটি মার্কিন ডলারে নির্মিত চতুর্মুখী ঘড়িটির এক মুখে লাগানো হয়েছে ৯ কোটি ৮০ লাখ পিস গ্লাস মোজাইক। প্রতিটি মুখে আরবিতে লেখা আছে ‘আল্লাহু আকবর’ শব্দগুচ্ছ, যা ২১০০০ রঙিন বিজলি বাতির আলোয় উদ্ভাসিত হয়ে ওঠে। আর পড়া যায় ৩০ কিলোমিটার দূর থেকেও। আল্লাহর নামের উপরের দিকে ৫৯০ মিটার উচ্চতায় স্থাপন করা হয়েছে সোনা দিয়ে মোড়ানো ৭৫ ফুট ডায়ামিটারের একটি বাঁকা চাঁদ। বিশেষ বিশেষ দিবস উপলক্ষে এ চাঁদ থেকে আকাশে বিচ্ছুরিত হবে প্রায় ১৬টি উজ্জ্বল আলোক রশ্মি, যা আকাশের ১০ কিলোমিটার উঁচুতে ছড়িয়ে যাবে। প্রায় ২০ লাখ খঊউ বাতি আল্লাহর নামকে প্রজ্জ্বল করে রাখে রাতভর। ২০০৪ সালে এটির নির্মাণ কাজ আরম্ভ হয় এবং ২০১০ সালের ১১ আগস্ট পবিত্র রমজান মাসের প্রথম দিনে মক্কা ঘড়ি তিন মাসের জন্য পরীক্ষামূলকভাবে চালু করা হয়। ২০১১ সালে এটি পূর্ণাঙ্গভাবে মুক্ত করা হয়। এই স্থাপত্যটির মূল স্থাপত্যের দায়িত্বে ছিল সৌদি বিন লাদিন গ্র“প এবং এর স্থপতি দার আল হানদাশাহ। গ্রিনিচ মান সময় বা গ্রিনিচ মান টাইম (GMT)-এর বিকল্প হিসেবেই তৈরি করা হয়েছে এই ‘মক্কা মান সময়’ বা Mecca Mean Time (MMT)।