ইসলামি ব্যাংকিং আল-কুরআন এর বিধিবিধান অনুসরণ করে পরিচালিত একটি নতুন ধরনের ব্যাংকিং ব্যবস্থা যাতে সুদ এবং সুদের বিনিময়ে ধার ও ঋণের লেনদেন নিষিদ্ধ। ইসলামী ব্যাংকিং ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার ঘোষিত লক্ষ্য হচ্ছে সুদ নির্মূলকরণ এবং অর্থনৈতিক যৌক্তিকতা, ন্যায়বিচার, দক্ষতা, স্থিতিশীলতা ও প্রবৃদ্ধির মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠা। ইসলামী ব্যাংকিং ব্যবস্থায় উদ্যোক্তা এবং পুঁজিমালিকের মধ্যে শিল্প অথবা বাণিজ্যিক ঝুঁকি সমানভাবে বণ্টন এবং বিনিয়োগ থেকে অর্জিত মুনাফা থেকে প্রাপ্ত অর্থ বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আনুপাতিক মূলধনের ভিত্তিতে ভাগ করার কথা বলা হয়েছে। প্রচলিত ব্যাংকসমূহ সাধারণত সেরা ঋণপরিশোধক্ষম গ্রাহকদের সেবা করতে চায়। পক্ষান্তরে, ইসলামী ব্যাংকিং সবচেয়ে উৎপাদনশীল ও লাভজনক প্রকল্পের সন্ধান করে। ব্যাংকিং সেবা প্রদানের ক্ষেত্রে ইসলামী ব্যাংকিং তাত্ত্বিকভাবে ব্যক্তিদের বিভিন্ন স্তর ও সামাজিক অবস্থানের ক্ষেত্রে বিরাজমান বৈষম্যের বিরোধিতা করে এবং বিভিন্ন শ্রেণির মধ্যে সামাজিক সাম্য প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ গ্রহণ করে।
হযরত মুহাম্মদ (স)-এর মুদারাবা চর্চার সূত্র ধরেই ইসলামী ব্যাংকিং ব্যবস্থার উৎপত্তি। নবী ছিলেন তাঁর স্ত্রীর জন্য মুদারিব প্রতিনিধি। স্ত্রী তাঁকে নিজের মূলধন এবং ব্যবসায়ের পণ্যাদি বিক্রয়ে নিয়োগ করে নিশ্চিত ছিলেন এবং নবীও শেয়ার অনুযায়ী লভ্যাংশ প্রদানে অঙ্গীকারাবদ্ধ ছিলেন। এটা ছিল নবীর পরিশ্রমের এবং উদ্যোগ গ্রহণের স্বীকৃতি। নবী (মুদারিব) তাঁর শেয়ারের লভ্যাংশ গ্রহণ করেছিলেন। দুর্গম বাণিজ্যপথে চলাচল অথবা ব্যবসায় পরিচালনাগত ঝুঁকির কারণে লোকসান হলে মুদারিবকে দায়ী করা যেত না। এ ধরনের অংশীদারিত্বকেই মুদারাবা বলে। মুশারাকা ধরনের অংশীদারি পদ্ধতিতে মূলধনে মুশারিক বা প্রতিনিধির অবদান থাকে এবং তিনি উচ্চহারে লভ্যাংশ দাবি করতে পারেন। সাত শতকের শুরুর দিকে ইরাক থেকে মরুভূমির মধ্য দিয়ে মুদারাবা পদ্ধতিতে মদিনায় কর-রাজস্ব প্রেরণ করা হয়েছিল। খলিফা ওমর মদিনা এবং ইরাকের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্যের কাজে অনাথদের অর্থ বিনিয়োগ করেছিলেন। গইতেইন লিখেছেন যে, এগারো শতকে মিসর এবং জেদ্দার মধ্যে উত্তর-দক্ষিণ বাণিজ্যে মুশারাকার চর্চা ছিল। হাইম গারবার সতেরো শতকে তুর্কি শহরে বসরার বাণিজ্যচর্চায় ৩২টি মুদারাবা চুক্তির রেকর্ড লিপিবদ্ধ করেন। মুদারাবা চর্চা করা হতো তিউনিসিয়া, ইন্দোনেশিয়া, আরব উপদ্বীপ এবং ভারতে।
আধুনিক ইসলামী ব্যাংকিং ধারণাসমসূহ ‘তিন স্তরবিশিষ্ট মুদারাবা’ বিষয়ক ধারণার ঐতিহাসিক প্রচলন থেকে উদ্ভূত। প্রথম স্তরে থাকেন পুঁজি বিনিয়োগে আগ্রহী একজন ব্যক্তি, দ্বিতীয় স্তরে রয়েছেন মুদারিব (মাধ্যম), যাকে চুক্তির মাধ্যমে রব-আল-মাল নিজের পুঁজি অর্পণ করেন, সবশেষে তৃতীয় স্তরে রয়েছেন উদ্যোক্তা যার সাথে মুদারিব চুক্তি স্বাক্ষর করেন এবং রব-আল-মাল কর্তৃক প্রথমে তার ওপর অর্পিত পুঁজিটি উদ্যোক্তাকে হস্তান্তর করেন।
১৯৫০-এর শেষ দিকে পল্লী এলাকায় একটি স্থানীয় ইসলামী ব্যাংক প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে পাকিস্তানে প্রথম একটি ইসলামিক অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার প্রচেষ্টা শুরু হয়। ঋণগ্রহণকারীরা আগাম প্রদত্ত ঋণের ওপর ব্যাংককে কোনো সুদ প্রদান করে নি, তবে ব্যাংক নিজের পরিচালন-ব্যয় উশুল করার জন্য একটি ক্ষুদ্র অঙ্কের মূল্য ধার্য করে। অভিজ্ঞতাটি ছিল উৎসাহব্যঞ্জক, তথাপি প্রধানত দুটি কারণে উদ্যোগটি ব্যর্থ হয়। প্রথমত, ব্যাংককে তার কাছে রক্ষিত আমানত ধরে রাখতে হতো দীর্ঘসময়। জামানতদাতাদের অধিকাংশই ছিল ভূস্বামী, তারাও যখন-তখন টাকা উত্তোলন করত। এ ছাড়াও দেখা গেল যে, ঋণের জন্য আবেদনকারীর সংখ্যা বৃদ্ধির ফলে আবেদনকৃত ঋণের পরিমাণ এবং ঋণযোগ্য তহবিলের মধ্যে ঘাটতি ক্রমেই বেড়ে যাচ্ছে। দ্বিতীয়ত, জমাকারীরা তাদের অর্থ যে পদ্ধতিতে ঋণ হিসেবে প্রদান করায় আগ্রহী, ব্যাংক পরিচালনায় স্টাফদের পূর্ণ স্বায়ত্তশাসন না থাকায় তারা তা অনুসরণে সক্ষম ছিল না।
মিশরের নীল নদের ব-দ্বীপে একটি পল্লী এলাকায় ১৯৬৩ থেকে ১৯৬৭ সালের মধ্যে মিত গমার সেভিংস ব্যাংক প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে ইসলামী ব্যাংকিং-এর দ্বিতীয় নিরীক্ষা পরিচালনা করা হয়। জামানতদাতা অথবা ঋণগ্রহীতা কাউকে কোনো সুদ প্রদান না করার ইসলামী নীতির ভিত্তিতে ব্যাংকটি চালিত হয়। পাকিস্তানি অভিজ্ঞতার ব্যতিক্রম হিসেবে এখানে ঋণগ্রহীতারা ব্যাংক থেকে ঋণসুবিধা পাওয়ার জন্য অর্থ জমা দিত। এ পরীক্ষার সাফল্যের ভিত্তিতে স্থানীয় এবং সঞ্চয়ী ব্যাংকসমূহের নেটওয়ার্ক গড়ে তোলার উদ্দেশ্যে শীঘ্রই আরও শাখা খোলা হয়। রাজনৈতিক পরিস্থিতি পরিবর্তনের কারণে প্রকল্পটি ব্যর্থতার সম্মুখীন হয়, তবে ১৯৭১ সালে কায়রোতে শহুরে পরিবেশে প্রথম ইসলামী ব্যাংক হিসেবে নাসের সোশ্যাল ব্যাংক নামে পুনরুজ্জীবিত হয়।
মিশরের উদাহরণ অনুসরণ করে মালয়েশিয়ায় ১৯৬৩ সালে এবং দুবাইতে ১৯৭৫ সালে ইসলামী ব্যাংকিং-এর আবির্ভাব ঘটে। মুদ্রা, বিনিময় এবং বাণিজ্যিক কার্যবিবরণীর জন্য প্রসিদ্ধ এবং ৫ বিলিয়ন ডলারেরও অধিক সম্পদের মালিক সৌদি আরবের পঞ্চাশ বছরেরও একটি পুরানো প্রতিষ্ঠান আল-রাজি কোম্পানিকে ইসলামী ব্যাংক হিসেবে লাইসেন্স প্রদান ইসলামী ব্যাংকিং-এর উল্লেখযোগ্য ঘটনা। প্রতিষ্ঠানটি ১৯৮৫ সালে আল-রাজি ব্যাংকিং ইনভেস্টিং করপোরেশন নামে কাজ শুরু করে এবং সে থেকে ইউরোপ ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বহুসংখ্যক বড় ব্যবসা-প্রতিষ্ঠানের সাথে সক্রিয় সম্পর্ক গড়ে তোলে। বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে লাভজনকভাবে পরিচালিত আল-রাজি কোম্পানির সাফল্য সৌদি সরকারকে পূর্ণমাত্রায় ইসলামী ব্যাংকিং চালু করার ব্যাপারে যথেষ্ট অনুপ্রাণিত করে। ১৯৭৫ সালে একটি ইসলামী আদর্শের কাঠামোর মধ্যে মুসলিম জাতিসমূহের সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে মুসলিম দেশসমূহ একটি বহুজাতিক উন্নয়ন করপোরেশন হিসেবে ইসলামী উন্নয়ন ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করে। বাংলাদেশ ইসলামী উন্নয়ন ব্যাংকের এক সদস্য।
ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড (আইবিবিএল) প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে বাংলাদেশে ইসলামী ব্যাংকিং-এর যাত্রা শুরু হয়। এটি দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার প্রথম সুদমুক্ত ব্যাংক হিসেবে পরিচিত। কোম্পানি আইন ১৯১৩-এর অধীনে সীমিত দায় নিয়ে একটি পাবলিক কোম্পানি হিসেবে এটি ১৯৮৩ সালের ১৩ মার্চ নিবন্ধিত হয়। ২০১০ সালের ডিসেম্বর মাসে এর ২৩৭ টি শাখা ছিল। এর অনুমোদিত মূলধনের পরিমাণ ছিল ১০০০ মিলিয়ন টাকা এবং পরিশোধিত মূলধন ছিল ৬৪০ মিলিয়ন টাকা। বাংলাদেশে দ্বিতীয় ইসলামী ব্যাংক হিসেবে পরিচিত আল বারাকা ব্যাংক ১৯৯৭ সালের ২০ মে একটি তফশিলি ব্যাংক হিসেবে ব্যাংকিং কার্যক্রম আরম্ভ করে। বর্তমানে এর নামকরণ হয়েছে আইসিবি ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড। এটি সৌদি আরবের খ্যাতিসম্পন্ন আর্থিক ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান আল-বারাকা ইনভেস্টমেন্ট অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট কোম্পানি, ইসলামী উন্নয়ন ব্যাংক, বাংলাদেশের কয়েকজন প্রতিষ্ঠিত শিল্পপতি এবং বাংলাদেশ সরকারের সমবেত উদ্যোগের একটি প্রতিষ্ঠান। ব্যাংকটির অনুমোদিত মূলধন ৬০০ মিলিয়ন টাকা এবং পরিশোধিত মূলধন ২৫৯.৫৫ মিলিয়ন টাকা। বর্তমানে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে এ ব্যাংকের ৩৫টি শাখা রয়েছে। গ্রাহকদের প্রচলিত বাণিজ্যিক ব্যাংকিং সেবা ছাড়াও ব্যাংকটি শিল্প ও ভূসম্পত্তি-সংক্রান্ত প্রকল্পসমূহের জন্য উল্লেখযোগ্য আর্থিক সহায়তা প্রদান করে থাকে।
১৯৯৬ সালে ইসলামী ব্যাংকিং নীতিমালার ভিত্তিতে কাজ করার লক্ষ্যে আরও দুটি ইসলামী ব্যাংককে অনুমতি প্রদান করা হয়। এগুলি হচ্ছে আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড এবং সোস্যাল ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড। দেশের পঞ্চম ইসলামী ব্যাংক হচ্ছে শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড। ২০০১ সালের ১০ মে একটি তফশিলী ব্যাংক হিসেবে ব্যাংকিং কার্যক্রম শুরু করে। বর্তমানে ব্যাংকটির অনুমোদিত মূলধন হলো ৬০০ মিলিয়ন টাকা এবং পরিশোধিত মূলধন হলো ৩৪২৫ মিলিয়ন টাকা। ব্যাংকটির ৫২ টি শাখা রয়েছে। ব্যাংকটির সামগ্রিক কর্মকান্ড বেশ সন্তোষজনক। ইতোমধ্যে দুটি সনাতন ব্যাংক যেমন এক্সিম (এক্সপোর্ট ইমপোর্ট ব্যাংক লিমিটেড) এবং ফাস্ট সিকিউরিটি ব্যাংক সম্পূর্ণরূপে ইসলামী ব্যাংকে রূপান্তরিত হয়েছে। এক্সিম ব্যাংক একটি সনাতন ব্যাংক হিসেবে ১৯৯৬ সালে যাত্রা শুরু করে এবং ২০০৪ সালের জুলাই মাসে ইসলামী ব্যাংকে রূপান্তরিত হয়। ব্যাংকটির অনুমোদিত মূলধন ৩৫০০ মিলিয়ন এবং পরিশোধিত মূলধন ২৬৭৭ মিলিয়ন টাকা। বর্তমানে ব্যাংকটির ৫৮ টি শাখা রয়েছে। ইসলামী ব্যাংকিং-এ রূপান্তরিত হওয়ার পর দুটি ব্যাংক এখন আগের তুলনায় অধিকতর দক্ষতার সাথে কর্মকান্ড পরিচালনা করছে।
সবমিলিয়ে বাংলাদেশে সাতটি ইসলামী ব্যাংক রয়েছে এবং তাদের শাখার পরিমাণ হলো গ্রাম ও শহর মিলে ৫৩২ টি। এসব ইসলামী ব্যাংক তাদের ব্যাংকিং কার্যক্রম একের পর এক শাখা খুলে কর্মপরিধি বিস্তৃত করছে। এদের মধ্যে সবার শীর্ষে রয়েছে ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড যার সারা দেশে রয়েছে ২৩৮ টি শাখা। সাম্প্রতিককালে বাংলাদেশে একটি নব্যতর সংযোজন হলো বিখ্যাত সনাতন ব্যাংকগুলি তাদের ব্যাংকিং-এ ইসলামী ব্যাংকিংকে জায়গা দিতে শুরু করেছে। ১২ টি সনাতন ব্যাংক এবং তিনটি বিখ্যাত বিদেশি ব্যাংক যেমন স্ট্যান্ডার্ড চাটার্ড ব্যাংক, এইচএসবিসি এবং ব্যাংক আল ফালাহ লিমিটেড ইসলামী ব্যাংকিং-এ অংশগ্রহণ শুরু করেছে। সনাতন ব্যাংকের শাখা এখন ২৫। এই সংখ্যা আরো বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং এগুলির কার্যক্রম অবশ্যই উল্লেখের দাবী রাখে। সরকারি ও বেসরকারি অনেক সনাতন ব্যাংকও, ইসলামী ব্যাংকিং চালু করবে এমন শাখা খোলার জন্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের রিপোর্ট অনুযায়ী সকল ইসলামী ব্যাংকের সম্মিলিত জমাকৃত অর্থের পরিমান হলো বাংলাদেশের ব্যক্তিখাতের সকল ব্যাংকের সম্মিলিত জমার ২৬.০৫ শতাংশ এবং সরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকের ১৭.৯৮ শতাংশের সমান। একইভাবে বাংলাদেশের সকল ইসলামী ব্যাংকের বিনিয়োগ হলো সকল ব্যক্তি খাতের বাণিজ্যিক ব্যাংকসমূহ ও সরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকের বিনিয়োগের যথাক্রমে ২৯.২৭ এবং ২২.১৫ শতাংশের সমান। ইসলামী ও সনাতন ব্যাংকসমূহের সামগ্রিক কর্মকান্ডের তুলনামূলক বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় যে সর্বমোট ৪৯ টি বাণিজ্যিক ব্যাংকের মধ্যে মাত্র ৭ টি ইসলামী ব্যাংক। এগুলি দেশের অর্থনীতির ২০ শতাংশ ব্যাংকিং কার্যক্রমই নিয়ন্ত্রণ করছে। বর্তমানে ইসলামী ব্যাংকসমূহের সর্বমোট জমার পরিমান হলো ৪৪২৭৫ কোটি টাকা। ইসলামী ব্যাংকগুলির মধ্যে বরাবরই ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড জমার পরিমান বৃদ্ধি ও বিনিয়োগে এগিয়ে রয়েছে। প্রবাসী বাংলাদেশীদের বাংলাদেশে বৈদেশিক মুদ্রা বা রেমিটেন্স দেশে আনার ক্ষেত্রে ইসলামী ব্যাংকগুলির যথেষ্ট সুনাম রয়েছে। গত পাঁচ বছরে ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড (আইবিবিএল) দেশে রেমিটেন্স আনার ক্ষেত্রে তালিকায় শীর্ষে অবস্থান করছে। প্রত্যেকটি ইসলামী ব্যাংক ঢাকা ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও তালিকাভূক্ত এবং প্রাথমিক শেয়ার বা আইপিও (Initial Public Offering) ইস্যু করে জনগণের কাছ থেকে মূলধন সংগ্রহ করেছে। সকল ইসলামী ব্যাংক সর্বাধুনিক ব্যাংকিং সেবা যেমন এটিএম কার্ড এবং অনলাইন ব্যাংকিং সেবা প্রদান করছে। এসবই প্রমাণ করে যে, ইসলামী ব্যাংকগুলি ব্যাংকিং উন্নয়ন এবং অর্থায়নের সেবা প্রদানের ক্ষেত্রে বাস্তবতার নিরিখে কার্যক্রম পরিচালনা করছে।
হযরত মুহাম্মদ (স)-এর মুদারাবা চর্চার সূত্র ধরেই ইসলামী ব্যাংকিং ব্যবস্থার উৎপত্তি। নবী ছিলেন তাঁর স্ত্রীর জন্য মুদারিব প্রতিনিধি। স্ত্রী তাঁকে নিজের মূলধন এবং ব্যবসায়ের পণ্যাদি বিক্রয়ে নিয়োগ করে নিশ্চিত ছিলেন এবং নবীও শেয়ার অনুযায়ী লভ্যাংশ প্রদানে অঙ্গীকারাবদ্ধ ছিলেন। এটা ছিল নবীর পরিশ্রমের এবং উদ্যোগ গ্রহণের স্বীকৃতি। নবী (মুদারিব) তাঁর শেয়ারের লভ্যাংশ গ্রহণ করেছিলেন। দুর্গম বাণিজ্যপথে চলাচল অথবা ব্যবসায় পরিচালনাগত ঝুঁকির কারণে লোকসান হলে মুদারিবকে দায়ী করা যেত না। এ ধরনের অংশীদারিত্বকেই মুদারাবা বলে। মুশারাকা ধরনের অংশীদারি পদ্ধতিতে মূলধনে মুশারিক বা প্রতিনিধির অবদান থাকে এবং তিনি উচ্চহারে লভ্যাংশ দাবি করতে পারেন। সাত শতকের শুরুর দিকে ইরাক থেকে মরুভূমির মধ্য দিয়ে মুদারাবা পদ্ধতিতে মদিনায় কর-রাজস্ব প্রেরণ করা হয়েছিল। খলিফা ওমর মদিনা এবং ইরাকের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্যের কাজে অনাথদের অর্থ বিনিয়োগ করেছিলেন। গইতেইন লিখেছেন যে, এগারো শতকে মিসর এবং জেদ্দার মধ্যে উত্তর-দক্ষিণ বাণিজ্যে মুশারাকার চর্চা ছিল। হাইম গারবার সতেরো শতকে তুর্কি শহরে বসরার বাণিজ্যচর্চায় ৩২টি মুদারাবা চুক্তির রেকর্ড লিপিবদ্ধ করেন। মুদারাবা চর্চা করা হতো তিউনিসিয়া, ইন্দোনেশিয়া, আরব উপদ্বীপ এবং ভারতে।
আধুনিক ইসলামী ব্যাংকিং ধারণাসমসূহ ‘তিন স্তরবিশিষ্ট মুদারাবা’ বিষয়ক ধারণার ঐতিহাসিক প্রচলন থেকে উদ্ভূত। প্রথম স্তরে থাকেন পুঁজি বিনিয়োগে আগ্রহী একজন ব্যক্তি, দ্বিতীয় স্তরে রয়েছেন মুদারিব (মাধ্যম), যাকে চুক্তির মাধ্যমে রব-আল-মাল নিজের পুঁজি অর্পণ করেন, সবশেষে তৃতীয় স্তরে রয়েছেন উদ্যোক্তা যার সাথে মুদারিব চুক্তি স্বাক্ষর করেন এবং রব-আল-মাল কর্তৃক প্রথমে তার ওপর অর্পিত পুঁজিটি উদ্যোক্তাকে হস্তান্তর করেন।
১৯৫০-এর শেষ দিকে পল্লী এলাকায় একটি স্থানীয় ইসলামী ব্যাংক প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে পাকিস্তানে প্রথম একটি ইসলামিক অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার প্রচেষ্টা শুরু হয়। ঋণগ্রহণকারীরা আগাম প্রদত্ত ঋণের ওপর ব্যাংককে কোনো সুদ প্রদান করে নি, তবে ব্যাংক নিজের পরিচালন-ব্যয় উশুল করার জন্য একটি ক্ষুদ্র অঙ্কের মূল্য ধার্য করে। অভিজ্ঞতাটি ছিল উৎসাহব্যঞ্জক, তথাপি প্রধানত দুটি কারণে উদ্যোগটি ব্যর্থ হয়। প্রথমত, ব্যাংককে তার কাছে রক্ষিত আমানত ধরে রাখতে হতো দীর্ঘসময়। জামানতদাতাদের অধিকাংশই ছিল ভূস্বামী, তারাও যখন-তখন টাকা উত্তোলন করত। এ ছাড়াও দেখা গেল যে, ঋণের জন্য আবেদনকারীর সংখ্যা বৃদ্ধির ফলে আবেদনকৃত ঋণের পরিমাণ এবং ঋণযোগ্য তহবিলের মধ্যে ঘাটতি ক্রমেই বেড়ে যাচ্ছে। দ্বিতীয়ত, জমাকারীরা তাদের অর্থ যে পদ্ধতিতে ঋণ হিসেবে প্রদান করায় আগ্রহী, ব্যাংক পরিচালনায় স্টাফদের পূর্ণ স্বায়ত্তশাসন না থাকায় তারা তা অনুসরণে সক্ষম ছিল না।
মিশরের নীল নদের ব-দ্বীপে একটি পল্লী এলাকায় ১৯৬৩ থেকে ১৯৬৭ সালের মধ্যে মিত গমার সেভিংস ব্যাংক প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে ইসলামী ব্যাংকিং-এর দ্বিতীয় নিরীক্ষা পরিচালনা করা হয়। জামানতদাতা অথবা ঋণগ্রহীতা কাউকে কোনো সুদ প্রদান না করার ইসলামী নীতির ভিত্তিতে ব্যাংকটি চালিত হয়। পাকিস্তানি অভিজ্ঞতার ব্যতিক্রম হিসেবে এখানে ঋণগ্রহীতারা ব্যাংক থেকে ঋণসুবিধা পাওয়ার জন্য অর্থ জমা দিত। এ পরীক্ষার সাফল্যের ভিত্তিতে স্থানীয় এবং সঞ্চয়ী ব্যাংকসমূহের নেটওয়ার্ক গড়ে তোলার উদ্দেশ্যে শীঘ্রই আরও শাখা খোলা হয়। রাজনৈতিক পরিস্থিতি পরিবর্তনের কারণে প্রকল্পটি ব্যর্থতার সম্মুখীন হয়, তবে ১৯৭১ সালে কায়রোতে শহুরে পরিবেশে প্রথম ইসলামী ব্যাংক হিসেবে নাসের সোশ্যাল ব্যাংক নামে পুনরুজ্জীবিত হয়।
মিশরের উদাহরণ অনুসরণ করে মালয়েশিয়ায় ১৯৬৩ সালে এবং দুবাইতে ১৯৭৫ সালে ইসলামী ব্যাংকিং-এর আবির্ভাব ঘটে। মুদ্রা, বিনিময় এবং বাণিজ্যিক কার্যবিবরণীর জন্য প্রসিদ্ধ এবং ৫ বিলিয়ন ডলারেরও অধিক সম্পদের মালিক সৌদি আরবের পঞ্চাশ বছরেরও একটি পুরানো প্রতিষ্ঠান আল-রাজি কোম্পানিকে ইসলামী ব্যাংক হিসেবে লাইসেন্স প্রদান ইসলামী ব্যাংকিং-এর উল্লেখযোগ্য ঘটনা। প্রতিষ্ঠানটি ১৯৮৫ সালে আল-রাজি ব্যাংকিং ইনভেস্টিং করপোরেশন নামে কাজ শুরু করে এবং সে থেকে ইউরোপ ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বহুসংখ্যক বড় ব্যবসা-প্রতিষ্ঠানের সাথে সক্রিয় সম্পর্ক গড়ে তোলে। বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে লাভজনকভাবে পরিচালিত আল-রাজি কোম্পানির সাফল্য সৌদি সরকারকে পূর্ণমাত্রায় ইসলামী ব্যাংকিং চালু করার ব্যাপারে যথেষ্ট অনুপ্রাণিত করে। ১৯৭৫ সালে একটি ইসলামী আদর্শের কাঠামোর মধ্যে মুসলিম জাতিসমূহের সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে মুসলিম দেশসমূহ একটি বহুজাতিক উন্নয়ন করপোরেশন হিসেবে ইসলামী উন্নয়ন ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করে। বাংলাদেশ ইসলামী উন্নয়ন ব্যাংকের এক সদস্য।
ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড (আইবিবিএল) প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে বাংলাদেশে ইসলামী ব্যাংকিং-এর যাত্রা শুরু হয়। এটি দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার প্রথম সুদমুক্ত ব্যাংক হিসেবে পরিচিত। কোম্পানি আইন ১৯১৩-এর অধীনে সীমিত দায় নিয়ে একটি পাবলিক কোম্পানি হিসেবে এটি ১৯৮৩ সালের ১৩ মার্চ নিবন্ধিত হয়। ২০১০ সালের ডিসেম্বর মাসে এর ২৩৭ টি শাখা ছিল। এর অনুমোদিত মূলধনের পরিমাণ ছিল ১০০০ মিলিয়ন টাকা এবং পরিশোধিত মূলধন ছিল ৬৪০ মিলিয়ন টাকা। বাংলাদেশে দ্বিতীয় ইসলামী ব্যাংক হিসেবে পরিচিত আল বারাকা ব্যাংক ১৯৯৭ সালের ২০ মে একটি তফশিলি ব্যাংক হিসেবে ব্যাংকিং কার্যক্রম আরম্ভ করে। বর্তমানে এর নামকরণ হয়েছে আইসিবি ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড। এটি সৌদি আরবের খ্যাতিসম্পন্ন আর্থিক ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান আল-বারাকা ইনভেস্টমেন্ট অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট কোম্পানি, ইসলামী উন্নয়ন ব্যাংক, বাংলাদেশের কয়েকজন প্রতিষ্ঠিত শিল্পপতি এবং বাংলাদেশ সরকারের সমবেত উদ্যোগের একটি প্রতিষ্ঠান। ব্যাংকটির অনুমোদিত মূলধন ৬০০ মিলিয়ন টাকা এবং পরিশোধিত মূলধন ২৫৯.৫৫ মিলিয়ন টাকা। বর্তমানে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে এ ব্যাংকের ৩৫টি শাখা রয়েছে। গ্রাহকদের প্রচলিত বাণিজ্যিক ব্যাংকিং সেবা ছাড়াও ব্যাংকটি শিল্প ও ভূসম্পত্তি-সংক্রান্ত প্রকল্পসমূহের জন্য উল্লেখযোগ্য আর্থিক সহায়তা প্রদান করে থাকে।
১৯৯৬ সালে ইসলামী ব্যাংকিং নীতিমালার ভিত্তিতে কাজ করার লক্ষ্যে আরও দুটি ইসলামী ব্যাংককে অনুমতি প্রদান করা হয়। এগুলি হচ্ছে আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড এবং সোস্যাল ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড। দেশের পঞ্চম ইসলামী ব্যাংক হচ্ছে শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড। ২০০১ সালের ১০ মে একটি তফশিলী ব্যাংক হিসেবে ব্যাংকিং কার্যক্রম শুরু করে। বর্তমানে ব্যাংকটির অনুমোদিত মূলধন হলো ৬০০ মিলিয়ন টাকা এবং পরিশোধিত মূলধন হলো ৩৪২৫ মিলিয়ন টাকা। ব্যাংকটির ৫২ টি শাখা রয়েছে। ব্যাংকটির সামগ্রিক কর্মকান্ড বেশ সন্তোষজনক। ইতোমধ্যে দুটি সনাতন ব্যাংক যেমন এক্সিম (এক্সপোর্ট ইমপোর্ট ব্যাংক লিমিটেড) এবং ফাস্ট সিকিউরিটি ব্যাংক সম্পূর্ণরূপে ইসলামী ব্যাংকে রূপান্তরিত হয়েছে। এক্সিম ব্যাংক একটি সনাতন ব্যাংক হিসেবে ১৯৯৬ সালে যাত্রা শুরু করে এবং ২০০৪ সালের জুলাই মাসে ইসলামী ব্যাংকে রূপান্তরিত হয়। ব্যাংকটির অনুমোদিত মূলধন ৩৫০০ মিলিয়ন এবং পরিশোধিত মূলধন ২৬৭৭ মিলিয়ন টাকা। বর্তমানে ব্যাংকটির ৫৮ টি শাখা রয়েছে। ইসলামী ব্যাংকিং-এ রূপান্তরিত হওয়ার পর দুটি ব্যাংক এখন আগের তুলনায় অধিকতর দক্ষতার সাথে কর্মকান্ড পরিচালনা করছে।
সবমিলিয়ে বাংলাদেশে সাতটি ইসলামী ব্যাংক রয়েছে এবং তাদের শাখার পরিমাণ হলো গ্রাম ও শহর মিলে ৫৩২ টি। এসব ইসলামী ব্যাংক তাদের ব্যাংকিং কার্যক্রম একের পর এক শাখা খুলে কর্মপরিধি বিস্তৃত করছে। এদের মধ্যে সবার শীর্ষে রয়েছে ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড যার সারা দেশে রয়েছে ২৩৮ টি শাখা। সাম্প্রতিককালে বাংলাদেশে একটি নব্যতর সংযোজন হলো বিখ্যাত সনাতন ব্যাংকগুলি তাদের ব্যাংকিং-এ ইসলামী ব্যাংকিংকে জায়গা দিতে শুরু করেছে। ১২ টি সনাতন ব্যাংক এবং তিনটি বিখ্যাত বিদেশি ব্যাংক যেমন স্ট্যান্ডার্ড চাটার্ড ব্যাংক, এইচএসবিসি এবং ব্যাংক আল ফালাহ লিমিটেড ইসলামী ব্যাংকিং-এ অংশগ্রহণ শুরু করেছে। সনাতন ব্যাংকের শাখা এখন ২৫। এই সংখ্যা আরো বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং এগুলির কার্যক্রম অবশ্যই উল্লেখের দাবী রাখে। সরকারি ও বেসরকারি অনেক সনাতন ব্যাংকও, ইসলামী ব্যাংকিং চালু করবে এমন শাখা খোলার জন্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের রিপোর্ট অনুযায়ী সকল ইসলামী ব্যাংকের সম্মিলিত জমাকৃত অর্থের পরিমান হলো বাংলাদেশের ব্যক্তিখাতের সকল ব্যাংকের সম্মিলিত জমার ২৬.০৫ শতাংশ এবং সরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকের ১৭.৯৮ শতাংশের সমান। একইভাবে বাংলাদেশের সকল ইসলামী ব্যাংকের বিনিয়োগ হলো সকল ব্যক্তি খাতের বাণিজ্যিক ব্যাংকসমূহ ও সরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকের বিনিয়োগের যথাক্রমে ২৯.২৭ এবং ২২.১৫ শতাংশের সমান। ইসলামী ও সনাতন ব্যাংকসমূহের সামগ্রিক কর্মকান্ডের তুলনামূলক বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় যে সর্বমোট ৪৯ টি বাণিজ্যিক ব্যাংকের মধ্যে মাত্র ৭ টি ইসলামী ব্যাংক। এগুলি দেশের অর্থনীতির ২০ শতাংশ ব্যাংকিং কার্যক্রমই নিয়ন্ত্রণ করছে। বর্তমানে ইসলামী ব্যাংকসমূহের সর্বমোট জমার পরিমান হলো ৪৪২৭৫ কোটি টাকা। ইসলামী ব্যাংকগুলির মধ্যে বরাবরই ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড জমার পরিমান বৃদ্ধি ও বিনিয়োগে এগিয়ে রয়েছে। প্রবাসী বাংলাদেশীদের বাংলাদেশে বৈদেশিক মুদ্রা বা রেমিটেন্স দেশে আনার ক্ষেত্রে ইসলামী ব্যাংকগুলির যথেষ্ট সুনাম রয়েছে। গত পাঁচ বছরে ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড (আইবিবিএল) দেশে রেমিটেন্স আনার ক্ষেত্রে তালিকায় শীর্ষে অবস্থান করছে। প্রত্যেকটি ইসলামী ব্যাংক ঢাকা ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও তালিকাভূক্ত এবং প্রাথমিক শেয়ার বা আইপিও (Initial Public Offering) ইস্যু করে জনগণের কাছ থেকে মূলধন সংগ্রহ করেছে। সকল ইসলামী ব্যাংক সর্বাধুনিক ব্যাংকিং সেবা যেমন এটিএম কার্ড এবং অনলাইন ব্যাংকিং সেবা প্রদান করছে। এসবই প্রমাণ করে যে, ইসলামী ব্যাংকগুলি ব্যাংকিং উন্নয়ন এবং অর্থায়নের সেবা প্রদানের ক্ষেত্রে বাস্তবতার নিরিখে কার্যক্রম পরিচালনা করছে।
[মুজাহিদুল ইসলাম - বাংলাপিডিয়া]