ইন্টারন্যাশনাল ফিন্যান্স ইনভেস্টমেন্ট অ্যান্ড কমার্স ব্যাংক লিমিটেড, বাংলাদেশ

ইন্টারন্যাশনাল ফিন্যান্স ইনভেস্টমেন্ট অ্যান্ড কমার্স ব্যাংক লিমিটেড প্রথমে ইন্টারন্যাশনাল ফিন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট কোম্পানি নামে বেসরকারি খাতে একটি বিনিয়োগ কোম্পানি হিসেবে ১৯৭৬ সালের অক্টোবর মাসে প্রতিষ্ঠিত হয়। এটি শুরুতে মধ্যপ্রাচ্যের দেশসমূহে একক এবং যৌথভাবে বিনিয়োগ ও  অর্থসংস্থান ব্যবসা পরিচালনা করে। এটি ২৪ জুন ১৯৮৩ তারিখে ইন্টারন্যাশনাল ফিন্যান্স ইনভেস্টমেন্ট অ্যান্ড কমার্স ব্যাংক লিমিটেড নাম নিয়ে বাংলাদেশে বাণিজ্যিক ব্যাংকিং ব্যবসা শুরু করে। শুরুতে আইএফআইসি ব্যাংকের অনুমোদিত মূলধন ছিল প্রতিটি ১০০ টাকা মূল্যের ১ মিলিয়ন সাধারণ শেয়ারে বিভক্ত ১০০ মিলিয়ন টাকা। পরিশোধিত মূলধন প্রাথমিক পর্যায়ের ৭১.৫ মিলিয়ন টাকা থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ১৯৮৬ সালে ৮০ মিলিয়ন টাকায় উন্নীত হয়। ব্যাংকটির মোট শেয়ারের শতকরা ৬০ ভাগকে এ-গ্রুপভুক্ত করা হয় এবং সেগুলির পূর্ণমূল্য পরিশোধ করে উদ্যোক্তা ও সাধারণ শেয়ারক্রেতা জনগণ। বি-গ্রুপভুক্ত অবশিষ্ট ৪০% শেয়ার বাংলাদেশ সরকারকে বরাদ্দ করা হয় এবং সরকার সেগুলির মূল্য পরিশোধ করে।

১৯৮৪ সালে আইএফআইসি ব্যাংক ও নেপালী নাগরিকদের যৌথ উদ্যোগে কাঠমান্ডুতে নেপাল-বাংলাদেশ ব্যাংক লিমিটেড এবং ১৯৮৫ সালে আইএফআইসি ব্যাংক ও ওমান নাগরিকদের যৌথ উদ্যোগে ওমান ইন্টারন্যাশনাল এক্সচেঞ্জ কোম্পানি এলএলসি প্রতিষ্ঠিত হয়। নেপালে আইএফআইসি ব্যাংক ও নেপাল বাংলাদেশ ব্যাংকের যৌথ উদ্যোগে একটি লিজিং কোম্পানি (নেপাল বাংলাদেশ ফাইন্যান্স এবং লিজিং কোম্পানি লিমিটেড) প্রতিষ্ঠিত হয়। পাকিস্তানে অবস্থিত ২টি শাখাকে ন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট লিজিং কোম্পানির সাথে যুক্ত করে যৌথ উদ্যোগে একটি ব্যাংক প্রতিষ্ঠিত হয়, যা বর্তমানে এনআইবি ব্যাংক নামে পরিচিত। ব্যাংকিং কোম্পানি হিসেবে আইএফআইসি ব্যাংক  ঢাকা ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ-এর তালিকাভুক্ত।

১২ সদস্যবিশিষ্ট একটি পরিচালনা পর্ষদ ব্যাংকটির সামগ্রিক ব্যবস্থাপনা ও নীতি নির্ধারণের দায়িত্বে নিয়োজিত। ২০০৯ সালের শেষে ব্যাংকটির মোট শাখার সংখ্যা ৮২ এবং ওই বছর ব্যাংকটির মোট কর্মকর্তা-কর্মচারীর সংখ্যা ছিল ২,১৯৫।

ঋণ ও অগ্রিম খাতে বিনিয়োগ ছাড়া ব্যাংকটি সরকারি ট্রেজারি বিল, প্রাইজ বন্ড, বিভিন্ন কোম্পানির শেয়ার ও ডিবেঞ্চার এবং কিছু বিদেশি কোম্পানিতে ইকুইটি মূলধন বিনিয়োগ করেছে। আইএফআইসি ব্যাংক ২০০৯ সালে ঋণসেবা প্রদানের লক্ষ্যে ৩টি এসএমই (ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প) সেন্টার চালু করেছে। এছাড়া ব্যাংক নারী উদ্যোক্তা ঋণ চালু করেছে। ব্যাংক কৃষিভিত্তিক ঋণ যেমন কৃষি সরঞ্জাম ঋণ, সেচ সরঞ্জাম ঋণ, পশুপক্ষী ও মৎস্য খামার ঋণ, ফসল ও মৎস্য ঋণের মাধ্যমে গ্রামীণ অর্থনীতিতে ভূমিকা রেখে চলেছে।
[মোহাম্মদ আবদুল মজিদ - বাংলাপিডিয়া]