নীলগিরিতে মেঘের মেলা

এবার নীলগিরিতে আমাদের ভ্রমণের সবচেয়ে বড় আকর্ষণ ছিল মেঘ। নীলগিরি ঘিরে যেন মেঘের মেলা বসেছে। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ২ হাজার ২০০ ফুট উচ্চতায় নির্জন প্রকৃতির মাঝে নীল আকাশ আর ঘন নীল মেঘের ছোঁয়াতে রূপের রানী নীলগিরি সেজেছে নবরূপে। আগে-পিছে, ডানে-বামে, মাথার ওপর হাত বাড়ালেই মেঘ। নীলগিরি ঘিরে মেঘের নৃত্য চলছে। কিন্তু মেঘকে কি ছোঁয়া যায়? উত্তর, ‘না’। শরীরজুড়ে ছোট ছোট পানির কণার শীতল স্পর্শই বলে দেয় মেঘের উপস্থিতি। ঘন মেঘের কারণে আড়ালে পড়ে যায় পঞ্চাশ গজ দূরের মানুষ, এমনকি গাছপালাও। ডানে-বামে, সামনে-পেছনে যে দিকে চোখ যায় সাদা ধবধবে মেঘ আর মেঘ। নীলগিরির পাদদেশের ছোট পাহাড়গুলোর ওপর এরা সাদা চাদর বিছিয়ে দিয়েছে যেন।

মেঘেরা কতটা দ্রুত বিস্তার লাভ করে সেটা এবার বর্ষায় যারা নীলগিরি ভ্রমণে গিয়েছেন তারাই বলতে পারবেন। চিন্তা করুন আপনি দাঁড়িয়ে আছেন আর সাদা মেঘ আপনার পাশ দিয়ে উড়ে যাচ্ছে। দারুণ অনুভূতি। শরীর-মন জুড়িয়ে যায় অল্পতেই। এ এক অসাধারণ সৌন্দর্য। অনেকেই মেঘের সৌন্দর্য উপভোগ করতে হাজার হাজার টাকা খরচ করে প্রতিবেশী দেশে যান দার্জিলিং দেখতে। কিন্তু আমাদের এ নীলগিরি রূপ-মাধুর্যে ওপারের দার্জিলিংয়ের চেয়ে কম কিসে?

কী নেই আমাদের নীলগিরিতে। প্রকৃতি যেন তার সবটুকু সৌন্দর্যের ডালি নিয়ে বসে পর্যটক মনে আনন্দ দিতে। বিশ্বাস না হলে বর্ষার এ মৌসুমে একবার পরিবার নিয়ে ঘুরেই আসুন না বাংলার দার্জিলিংখ্যাত বান্দরবান থেকে। নীলগিরি ছাড়া বান্দরবানে বগালেক, চিম্বুক পাহাড়, নীলাচল, শৈলপ্রপাত, পাহাড় চূড়ার স্বর্ণমন্দিরসহ আরও অনেক দর্শনীয় স্থান রয়েছে। সবই দেখার মতো। একেকটির সৌন্দর্য একেক রকম। তবে সব ছাপিয়ে নীলগিরির সৌন্দর্যই যেন বেশি কাছে টানে পর্যটকদের। তাই বান্দরবান ভ্রমণে যাব আর নীলগিরি যাব না তা কী করে হয়?

তাই এবারের বান্দরবান ভ্রমণের পরিকল্পনায় প্রথমেই ছিল নীলগিরির নাম। পরে না তাড়াহুড়ায় আসল স্পটটাই মিস হয়ে যায় তাই যেমন পরিকল্পনা তেমন কাজ। আগের রাতে রাতভর বৃষ্টি হয়েছে। বৃষ্টিভেজা বন্ধুর পাহাড়ি পথের খাঁজে খাঁজে লুকিয়ে রয়েছে অজানা ভয়-আশঙ্কা।

মাসখানেক আগে পাশের পার্বত্য জেলা রাঙ্গামাটিতে পাহাড়ধসে স্মরণকালের সেই ভয়াবহ প্রাণহানির কথা মনে আছে। তা সত্ত্বেও এ অজানা ভয়-আশঙ্কা মাথায় নিয়েই বান্দরবান পৌঁছেই হোটেলে ব্যাগ-ব্যাগেজ রেখে দেরি না করে বেরিয়ে পড়লাম দশ সদস্যের দল নিয়ে নীলগিরির পথে। দলনেতা নোঙর ট্যুরিজমের রফিক। এর আগে আমাদের এ দলের অনেকেরই নীলগিরি ভ্রমণের অভিজ্ঞতা আছে। তারাও প্রথমে নীলগিরি ভ্রমণকেই প্রাধান্য দিলেন নতুন রোমাঞ্চের আশায়।

গাড়ি আগেই ঠিক করে রেখেছিলেন রফিক ভাই। সুতরাং এ নিয়ে কোনো বেগ পেতে হয়নি। চালক হোটেলের সামনে এসে উঠিয়ে নিলেন সবাইকে। উঁচু-নিচু স্বপ্নিল পথ বেয়ে ছুটে চলেছে গাড়ি। গাড়ি বলতে চাঁদের গাড়ি। বান্দরবানের পাহাড়ি আঁকা-বাঁকা, এবড়োথেবড়ো পথ ভ্রমণে পর্যটকদের জন্য এ চাঁদের গাড়িই একমাত্র অবলম্বন। এগুলোর চালকও খুবই দক্ষ। তাছাড়া আমাদের গর্বের সেনাবাহিনীর সরাসরি নিয়ন্ত্রণে থাকে এসব গাড়ি। পর্যটকদের সুবিধার্থে বিভিন্ন স্পটে চাঁদের গাড়ির ভাড়া তাদের তত্ত্বাবধানেই ঠিক করা হয়। সুতরাং অতিরিক্ত ভাড়া চেয়ে পর্যটকদের পকেট কাটার সুযোগ এখন অনেকটাই কমে গেছে বান্দরবানে।

যাই হোকে, ছাদখোলা চান্দের গাড়িতে দাঁড়িয়ে চারপাশের সৌন্দর্য উপভোগ করতে ভুললাম না। মুখে মেঘের ঝাপটা রাতভর দীর্ঘ ভ্রমণের ক্লান্তি দূর করে দিল নিমিষেই। দু’পাশে সারি সারি পাহাড়। পাহাড়ের গোড়া থেকে চূড়া অবধি সবুজের চাদরে মোড়া। খারা পাহাড়ের ভাঁজে ভাঁজে জুম চাষ পদ্ধতিতে জাম্বুরা, পেঁপে, জলপাই, আম, কাঁঠাল, কমলালেবু, কলা, আনারস ও পেয়ারার বন সৃজন করেছেন পাহাড়ি ললনারা। তারা কতটা যে পরিশ্রমী তা এ বাগানগুলোর কাছে না গেলে বোঝা যাবে না। পিঠে বেতের ঝুড়ি নিয়ে খারা পাহাড় বেয়ে বাগানের যতœ নিচ্ছেন আপন মনে। তাদের হাতের কোমল পরশে বাগানের গাছপালাগুলো তরতর করে বেড়ে চলেছে। এসব বাগানের মাঝে বেড়ে উঠেছে সেগুন, কড়ই, নিমসহ নানা জাতের ফলদ ও বনজ গাছ। এসব গাছপালার সঙ্গে হিমেল হাওয়ায় ভেসে আসা টগর, গাঁদা, বকুল, বেলি, মাধবিলতা, জবা ফুলের সুবাসে মন হারিয়ে যায় কোনো এক স্বর্গীয় অনুভূতির খোঁজে।

প্রকৃতির এ রূপলাবণ্যের টানে কতবার যে বান্দরবান যাওয়া হয়েছে গুনে শেষ করা যাবে না। তবে প্রতিবারই বান্দরবানকে যেন নতুনরূপে আবিষ্কার করেছি আমরা। নীলগিরির পথে প্রথমেই চোখে পড়ে পাথুরে ঝরনা শৈলপ্রপাত, পরে চিম্বুক পাহাড়। দু’টোই দেখার মতো। একসঙ্গে পাহাড়, নদী, সমুদ্র, ঝরনাধারা, বন-বনানীর সৌন্দর্যের দেখা মিলে বাংলার দার্জিলিংখ্যাত চিম্বুক পাহাড়ে উঠলে। দক্ষিণে পৃথিবীর দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত দেখা যায়। তবে এবারের যাত্রায় দেখা যায়নি কুয়াশার মতো ঘন মেঘের কারণে। শুধু চিম্বুক নয়, চিম্বুক থেকে নীলগিরি পর্যন্ত ১৮ কিলোমিটার পথের কোথাও মেঘের ঘনত্ব এত বেশি ছিল যে কয়েক গজ দূরের কালো পিচঢালা পথটিও চোখে পড়ছিল না এবারের ভ্রমণে। ভরা শীতের মৌসুমে ঘন কুয়াশায় পথঘাট যেভাবে ঢাকা থাকে আরকি।

ভূমি থেকে এ পথের উচ্চতা কোথাও কোথাও ১৮০০ কিলোমিটার বা তারও বেশি। কোথাও কোথাও এ পথের দু’পাশে গভীর খাদ। অর্থাৎ আমরা পাহাড় চূড়া দিয়ে চলছি। এর মধ্যে বর্ষায় রাস্তার অবস্থা কোনো কোনো জায়গায় খুবই খারাপ। এ অবস্থায় খানিকবাদে মুষলধারে বৃষ্টি। পাহাড়ের এ চূড়ায় তখন মনের অবস্থা কী দাঁড়ায় ভাবুন একবার। রাঙ্গামাটির সেই লোমহর্ষক পাহাড়ধসের ঘটনা আবারও স্মৃতিপটে ভেসে এলো। সে সময় বান্দরবানের এ পথেরও কয়েক জায়গায় ভূমিধসের ঘটনা ঘটেছিল। তবে এ নিয়ে আমাদের চান্দের গাড়িচালকের মনে চিন্তার লেশমাত্র নেই। গাড়ি চালাচ্ছেন আপন মনেই। একটু পর হঠাৎই বৃষ্টির দেখা নেই। সেখানে জায়গা করে নিয়েছে ঘন মেঘের দল। তবে একটু দূরে আরেক পাহাড়ে তখনও বৃষ্টি হচ্ছিল। বামে দূরে আরেক পাহাড় চূড়ায় রোদের ঝলকানি। এই রোদ, এই মেঘ, এই বৃষ্টি এই হল নীলগিরির এই বন্ধুর পথের আজকের প্রকৃতি। প্রকৃতির এমন বহুরূপী রূপ-মাধুর্য উপভোগ করতে এক সময় যখন নীলগিরি পৌঁছলাম তখন মনে এনে দিল নতুন অনুভূতি।

ভূমি থেকে এর উচ্চতা ৩ হাজার ফুট। উচ্চতার কারণে শীত-বর্ষায় বান্দরবান বেড়ানোর সবচেয়ে আকর্ষণীয় জায়গা এটি। তবে বর্ষায় যে এতটা আকর্ষণীয় হয় সেটা বোঝা গেল এবারের ভ্রমণে। এটা লিখে বোঝানো কঠিন। বুঝতে হলে বর্ষার মৌসুম থাকতে থাকতে প্রিয়জনকে নিয়ে একবার ঘুরে আসুন। অবশ্য বান্দরবানে প্রায় সারা বছরই কম-বেশি বৃষ্টি থাকে। এ কারণে প্রায় সারা বছরই বান্দরবানে মেঘের মেলা বসে। বর্ষায় একটু বেশি এই যা। সে যাকগে, সবশেষ ঠিক দুই বছর আগে নীলগিরি যাওয়া হয়েছিল। এই দুই বছরে নীলগিরি আগের থেকে অনেক সুন্দর হয়েছে। পর্যটকদের সুবিধার্থে অনেক উন্নয়ন হয়েছে। নতুন করে সাজিয়েছে সেনাবাহিনী।

পর্যটকদের সুবিধার্থে পাহাড়ের ঢালে নতুন একটি রেস্টুরেন্ট তৈরি করা হয়েছে। এখানে বসে খেতে খেতে ডানে-বাঁয়ে চোখ বুলালে দূর-বহুদূরে দেখা যায় দেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পাহাড় কেওক্রাডং, পাহাড় চূড়ার বগা লেক, কক্সবাজারের সমুদ্রসৈকত ও চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর। চারপাশের প্রকৃতির রূপলাবণ্য উপভোগের পাশাপাশি মাত্র ১২০ টাকায় মোরগ পোলাওয়ের স্বাদ পর্যটক মনে দীর্ঘ ভ্রমণের ক্লান্তি দূর করে দেবে নিমিষেই। সিঁড়ি বেয়ে রেস্টুরেন্টের ছাদে উঠে নিচে তাকালে মাথা ঘুরে যায়। দুই পাশেই কয়েকশ’ ফুট গভীর খাদ। উত্তরে পাহাড়ি নদী সাঙ্গুর সৌন্দর্য উপভোগ করা যায় এখানে দাঁড়িয়েই।

রেস্টুরেন্ট ছাড়াও পার্কিং এলাকা থেকে নীলগিরি চূড়ায় হেঁটে ওঠার জন্য নান্দনিক কারুকাযে তৈরি করা হচ্ছে ওয়াক ওয়ে। নানা রং ও ঢংয়ে পাহাড় কেটে তৈরি করা হয়েছে কয়েকটি প্রশস্ত চত্বর। এগুলোর মাঝে বসানো হয়েছে নজরকাড়া নকশায় অনেক বসার বেঞ্চ ও শেড। এগুলোতে বসে প্রিয়জনের সঙ্গে গল্প করে কাটিয়ে দেয়া যায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা।

আসলে নীলগিরির রূপ-মাধুর্য লিখে শেষ করার নয়। দেখতে দেখতে কখন যে পশ্চিম আকাশে সূর্য লাল আভা ছড়িয়েছে বুঝতেই পারিনি। ফেরার পথে তাকালাম। কালো পিচঢালা পথটা সাধা মেঘের কারণে আবছায়ার মতো চোখে পড়ছে। নীলগিরির চূড়া থেকে মনে হল দু’পাশের গাছপালা বেয়ে দূরে পাহাড়ের দিকে বড়সড় অজগর উঠে গেছে। এ পথে যেতে হবে ভেবে ভয়ে গা ছমছম।

একদিকে ভয় অন্যদিকে ভালো লাগা দুু’য়ে মিলে দারুণ অনুভূতি। এ নিয়ে নীলগিরি থেকে আবার হোটেলের পথ ধরলাম আমরা। ফেরার পথেও কয়েকবার বৃষ্টি নামল। সঙ্গে মেঘের মেলাতো রয়েছেই। চারপাশের প্রকৃতিতে তখনও হিমেল হাওয়া বইছিল। ঢাকা থেকে বান্দরবান পৌঁছা, তারপর দেরি না করে আবার নীলগিরির পথ ধরা- সবমিলে দীর্ঘ ভ্রমণের ক্লান্তি সবার চোখে-মুখে। তাই নীলগিরি থেকে গাড়ি ফের বান্দরবানের পথ ধরতেই হিমেল হাওয়ার পরশে ঘুমে প্রায় সবারই চোখ বুজে আসছিল। বাচ্চারাসহ কয়েকজন ঘুমিয়ে পড়লাম। ঘুম ভাঙল কর্মব্যস্ত বান্দরবান শহরে গাড়ি-ঘোড়ার শব্দে।

কীভাবে যাবেন


ঢাকা থেকে বান্দরবান যাওয়ার জন্য উন্নতমানের অনেক এসি-ননএসি বাস সার্ভিস রয়েছে। হানিফ, শ্যামলী, সৌদিয়া, ইউনিক, ঈগল, সেইন্ট মার্টিন পরিবহন, ডলফিন পরিবহন ইত্যাদি। ভাড়া ননএসি ৬০০ থেকে ৬২০ টাকা। এসি ৯০০ টাকা। সুবিধামতো এগুলোর যে কোনোটি বেছে নিতে পারেন আপনার জন্য। বান্দরবান পৌঁছে নীলগিরি যাওয়ার বাহনের বিষয়ে আগেই বলেছি। হ্যাঁ, চান্দের গাড়ি। নীলগিরি পর্যন্ত এ গাড়ির ভাড়া ৪ হাজার টাকা। এর সঙ্গে নীলগিরিতে ৩০০ টাকা পার্কিং চার্জ গুনতে হবে।

কোথায় থাকবেন



নীলগিরিতে রাতযাপনের জন্য সেনাবাহিনী পরিচালিত মেঘদূত, আকাশনীলা, নীলাঙ্গনা, হেতকরা রাইচা, মারমা রাইচা নামের আকর্ষণীয় কয়েকটি কটেজ রয়েছে। আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সংবলিত এসব কটেজে অবস্থান ও রাতযাপনের জন্য সেনাবাহিনীর বান্দরবান ব্রিগেড হেডকোয়ার্টারের সঙ্গে আগাম যোগাযোগ করতে হয়। ভাড়াট ৪ হাজার থেকে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত। ভাড়া একটু বেশি পড়লেও এতে থাকার মজাই আলাদা। তবে চিন্তা নেই। বান্দরবান শহরে রয়েছে থাকার জন্য আধুনিক সব সুযোগ-সুবিধা সংবলিত প্রচুর ভালো মানের হোটেল। সুযোগ-সুবিধার সঙ্গে রুম ভাড়ায়ও তারতম্য ঘটে এসব হোটেলে। সেটা ৮০০ থেকে ৩ হাজার টাকা বা কোথাও কোথাও তারও বেশি হতে পারে।

যারা পরিবার বা বড় গ্রুপ নিয়ে বান্দরবান ভ্রমণে যেতে চাইছেন অথচ থাকা-খাওয়া, আসা-যাওয়ার ঝক্কি-ঝামেলা এড়িয়ে শুধু ভ্রমণের আনন্দ উপভোগ করতে চান তারা ভ্রমণ আয়োজক কোম্পানিগুলোর দ্বারস্থ হতে পারেন। এর মধ্যে রয়েছে অবকাশ ট্যুরিজম- ০১৭১১১৭৩৪৩৪, বেঙ্গল ট্যুরিজম- ০১৮১১৪৪৩৪৪৮, এভারগ্রিন ট্যুরিজম- ০১৮১৯২৮৭২৫১, নোঙর ট্যুরিজম- ০১৯২২১১২৬৭৬, গ্যালাক্সি- ০১৭২৯২৮৮৮৮৮ গ্রিন হলিডেস ট্যুরস- ০১৫৫২৫৫৫৫৫০ ইত্যাদি।